মোহাম্মদ এরশাদ বাঁশখালী চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।
অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন সড়ক (প্রকাশ গুনাগরী টু খানখানাবাদ সড়ক উন্নয়ন কাজে অনিয়ম,ধুলাবালুতে অতিষ্ঠ জনজীবন সড়ক উন্নয়নের কাজের জন্য পুরোনো পিচঢালাই ওঠানো হয়। তার ওপরে বিছানো হয় ইটের খোয়া। এরপর এভাবেই ফেলা রাখা হয়েছে কয়েক মাস ধরে। যানবাহনের চাকার আঘাতে ইট-বালু গুঁড়া হয়ে লাল পাউডারের মতো হয়ে গেছে। যানবাহন চলাচলের সময় বা সামান্য বাতাসেও এসব ধুলা উড়ে বসে বাড়িঘরে, সবুজ গাছপালার রঙ লাল আস্তর। শুধু ধুলাবালুই নয়;গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির অধিকাংশ জায়গা খানাখন্দে ভরা। গর্তের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এমন চিত্র অধ্যাপক আসাব উদ্দিন সড়কের। এই সড়কের দুই পাশে আছে বসতবাড়ি, দোকানপাট,স্কুল,কলেজ মসজিদ। ধুলায় দুর্ভোগের শেষ নেই পথচারী ও আশপাশের বাসিন্দাদের।
সড়কের পাশে বসবাসরত পরিবারের সদস্যরা বলেন,কাজ বন্ধ থাকার কারণে সড়কের ইটের গুড়োর লাল ধুলাবালুতে ঘরে থাকতে পারছি না। ঘরের খাবার-দাবার, জামাকাপড়, আসবাবপত্র সবকিছু ধুলাবালুতে নষ্ট হচ্ছে। ঘরের সবার সর্দি-কাশি লেগেই আছে।’পুরো সড়ক যেন ধুলার রাজ্য। নিঃশ্বাস নেয়ার উপায় নেই।
জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরী টু মোশাররফ আলী বাজার পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের কাজ প্রায় ৭ কোটি টাকা
চুক্তি মূল্যে এ কাজের
উদ্বোধন করা হয় ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে।তার কিছুদিন পরে কাজ শুরু হয়। কালীপুর ইউনিয়নে গুনাগরী খাসমহল থেকে মোশাররফ আলী মিয়া বাজার পর্যন্ত সড়কের দুপাশে প্রস্থ করে পুরাতন পিচ তুলে বিছানো হয় ইটের খোয়া। রোলার করার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। গুনাগরী খাসমহল থেকে মোশাররফ আলী মিয়া বাজার পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির অধিকাংশ জায়গা খানাখন্দে ভরা। গর্তের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।হরহামেশা বিকল হচ্ছে পণ্য বোঝাই যানবাহন। সীমাহীন দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিপাকে আছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী স্থানীয় বাসিন্দা আর দোকানিরাও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটিতে ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করলে ধুলাবালিতে সড়ক অন্ধকার হয়ে আসে। এসব বাতাসে উড়ে রাস্তার পাশের বাড়িঘর, গাছপালা, দোকানপাট, স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, ঝোপঝাড়ের ওপর পড়ছে। আশেপাশের ঝোপঝাড় ও গাছপালার পাতায় লালচে আস্তরণ পড়েছে। পাল্টে গেছে বাড়িঘর, স্কুল, দোকানপাট ও মসজিদের দেয়ালের রঙ।শুধুই তাই-ই নয় ব্যবহারের পোশাক একবারের বেশি ব্যবহারের সুযোগ নেই; ভুক্তভোগীরা আরও জানিয়েছে ঘরের আসবাবপত্র,ব্যবহারিক জিনিসপত্র, খাবার কোনো কিছু রাস্তার ধুলা থেকে রেহায় নেই। ধুলা থেকে বাঁচতে কেউ কেউ পাইপ দিয়ে পানি ছিটাচ্ছেন রাস্তায়।
গুনাগরী থেকে মোশাররফ আলী মিয়া বাজার পর্যন্ত ৩ ইউনিয়নে ২০ ওয়ার্ডের অন্তত ২৫-৩০ হাজার মানুষ নিয়মিত এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়াও ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করেই। পথচারী সাথে কথা হলে তারা জানায়, রাস্তার উন্নয়ন কাজের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে, কিন্তু ওই কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা জানেন না তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, কাজটির শুরু থেকেই ধীর গতিতে করা হচ্ছে। প্রথমে খনন করে অনেকদিন ফেলে রাখা হয়েছিলো। কয়েক মাস আগে খোয়া,বালু ও পুরনো রাবিশ দিয়ে রোলার করা হয়েছে। ছোট-বড় গাড়ি যাতায়াতের সময় প্রচুর- ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে। দ্রুত রাস্তাটি কার্পেটিং করে আমাদেরকে এই দূষণ থেকে রক্ষা করা হোক।
স্থানীয়রা জানায়,‘সড়কের কাজ না করে কেন এভাবে ফেলে রাখা হলো। এ পথ দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিদিন মানুষকে কী পরিমাণ দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে, তা ভাষায় বলার মতো নয়। একবার কেউ এ পথ দিয়ে গেলে মানুষের চেহারা আর মানুষের থাকে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবছার কনস্ট্রাকশনের গাফিলতির ও অনিয়মের জন্যই এই ভয়াবহ কষ্টের মধ্যেই আমাদের বসবাস করতে হচ্ছে।’ একইভাবে বিভিন্ন অফিস আদালত ও স্কুল কলেজে যেতেও চরম বেগ পেতে হচ্ছে পথচারীদের। এছাড়াও ছোট ছোট যানবাহনগুলো বিশেষ করে অটোবাইক ও পাখিভ্যানগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়ক দিয়ে চলাচলের সময়। এ অবস্থায় সড়ক উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
মেসার্স আবছার কনস্ট্রাকশনের খোরশেদ নামে একজন বলেন, ফান্ড না থাকায় কাজ করতে পারছেনা, বিল পাইনাই সেই জন্যে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিল পেলে কাজ করতে পারবো।
সিনিয়র প্রকৌশলী (এলজিইডি) সুমন তালুকদার ও সহকারী কনসেক্ট্রোল অফিসার নুরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে সড়কটির কাজ পরিদর্শনে যান বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফাহাদ, এসময় তিনি বলেন, কাজের অনিয়ম দেখা গেছে, যথাযথ কাজ বুঝিয়ে দিতে না পারলে বিল পেমেন্ট করা হবে না।
