চট্টগ্রামের পটিয়া হাসপাতালে ঠাঁই না হওয়ায় হাসপাতাল কম্পাউন্ডের জঙ্গলেই সন্তান প্রসব করেছেন এক প্রসূতি। চুড়ান্ত লেবার পেইনের মাঝপথেই ডাক্তার নার্সরা প্রসূতিকে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে এলাকাবাসী, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার নার্সদের এমন গর্হিত অমানবিক দায়িত্বহীনতার বিচার দাবী করেছে ভূক্তভোগীর পরিবার।
১৮ অক্টোবর শনিবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতাল কম্পাউন্ডের ভেতর জঙ্গলে চরম অমানবিক এ ঘটনা ঘটে। প্রসূতির জটর থেকে প্রায় অর্ধেক বের হয়ে যাওয়া সন্তানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসব করানো সম্ভব নয় বলে পটিয়া হাসপাতাল থেকে চমেক হাসপাতালে রেফার করে কর্তব্যরত চিকৎসক।
পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলার লেবার ওয়ার্ড থেকে নিচে নামতেই প্রসব বেদনা জোরালো হলে প্রসূতির স্বজনেরা প্রসূতিকে তাৎক্ষনিকভাবে লোকচক্ষুর আড়াল করতে হাসপাতাল ভবনের সাথে লাগোয়া পার্শ্ববর্তি জঙ্গলে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানেই তিনি প্রচন্ড প্রসব বেদনায় একপ্রকার অসহায় বিপর্যস্ত অবস্থায় এক কন্যা সন্তনের জন্ম দেন। পরে সন্তানসহ তাকে হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে নেওয়া হয়।
প্রসূতির স্বামী মোঃ ইলিয়াছ বলেন, পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে সন্ধ্যা ৭টার পটিয়া হাসপাতালে যান। সেখানকার লেবার ওয়ার্ডে সন্তান অর্ধেক বের হওয়ার পর নার্স তাকে ডেলিভারি করাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বলা হয়-বাচ্চার পজিশন উলটো। তারা কোনো চিকিৎসা না দিয়ে তাড়াহুড়ো করে ছাড়পত্র দিয়ে ২য় তলা থেকে নিচে নামিয়ে দেন। নিচে নামানোর পরপরই হাসপাতালের পশ্চিম পাশে জঙ্গলে তার স্ত্রী অবস্থান নেয় এবং সেখানে সন্তানের জন্ম হয়।
হাসপাতালের নার্স অনামিকা জানান, চমেক হাসপাতালের নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে করতেই বাচ্চা ডেলিভারি হয়ে গেছে। যে বাচ্ছা আপনা আপনিই ডেলিভারী হয়ে গেল, তাকে কেন চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার করা হল জানতে চাইলে সে কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার মিন্টু দে’র কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, নার্স বলেছেন তাই তিনি রেফার করে দিয়েছেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক হিসাবে রোগীর প্রতি তার কোন রেসপন্সিবিলিটি ছিল কিনা এবং তিনি তার দায়িত্বের প্রতি কতটুকু সক্রিয় ছিলেন এবং নার্সের কথায় তিনি রেফার করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে, ডাক্তার মিন্টু দে তার কোন জবাব দেননি।
পটিয়া হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের চরম অমানবিক ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে, বিক্ষুদ্ধ জনতা ও প্রসূতির স্বজনেরা দায়িত্বে অবহেলার গুরুতর অপরাধে ডাক্তার ও নার্সদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
