ঢাবি ক্যাম্পাসে অনৈতিক দেহ ব্যবসার গুরুতর অভিযোগ

ডাকসু সমাজসেবা সম্পাদক জুবায়ের আল নেসারীর

এনামুল হক রাশেদীঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক দেহ ব্যবসা চলছে— এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন সদ্য নির্বাচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক জুবায়ের আল নেসারী। তিনি জুলাই আন্দোলনের সময় ‘এ বি জুবায়ের’ নামে পরিচিতি লাভ করেন।

সম্প্রতি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জুবায়ের দাবি করেন, তিনি রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুসন্ধানী অভিযান চালিয়েছেন। এ সময় তিনি এমন কিছু স্থান শনাক্ত করেন যেখানে ‘ভয়াবহ রকমের দেহ ব্যবসা’ চলে।

দুটি সক্রিয় গ্রুপ ও পুলিশ মদদের অভিযোগঃ জুবায়েরের ভাষ্যমতে, এই অবৈধ দেহ ব্যবসায় দুটি গ্রুপ জড়িত— একটি নারী ও অন্যটি ট্রান্সজেন্ডারদের (তৃতীয় লিঙ্গ) গ্রুপ। তিনি অভিযোগ করেন, এসব কার্যক্রমে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কিছু সদস্যও কমিশন খেয়ে মদদ দিচ্ছে।

জুবায়ের তার পোস্টে উল্লেখ করেন, “যেসব নারী এতে যুক্ত, তাদের অনেকের পরিবার আছে। পরিবার জানে তারা অফিস বা দোকানে চাকরি করছে। বাস্তবে তারা চাকরির নামে এই অনৈতিক কাজে জড়িত।”

বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া সমকামীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগঃ ডাকসুর এই সমাজসেবা সম্পাদক আরও দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কিছু সমকামী শিক্ষার্থী বিলাসবহুল জীবনের চাহিদা পূরণের জন্য দেহ ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, অনেক ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি সার্জারির মাধ্যমে নারীসদৃশ শরীর তৈরি করে এই পেশায় নেমেছে।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে সন্দেহজনক কাঠামোঃ জুবায়েরের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশনের আশপাশ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি সংলগ্ন এলাকা, মুক্ত মঞ্চ, দোয়েল চত্বর এবং তিন নেতার মাজার এলাকায় রাতে সন্দেহজনক চলাচল দেখা যায়। দিনের বেলায় এই এলাকাগুলোতে ভবঘুরে ও ছিন্নমূল মানুষের উপস্থিতি থাকলেও গভীর রাতে সেগুলো দেহ ব্যবসার আস্তানায় পরিণত হয় বলে দাবি তার।

শিক্ষার্থী ও প্রাক্তনদের প্রতিক্রিয়াঃ ঢাবির বর্তমান ও সাবেক বেশ কিছু শিক্ষার্থী জুবায়েরের এই অভিযোগকে আংশিক সত্য বলে মন্তব্য করেছেন। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।একজন সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র পরিবেশ যারা কলুষিত করছে, তাদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ক্যাম্পাসের সুনাম রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।”

তদন্তের দাবি ও প্রশাসনের নীরবতাঃ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। অনেকেই জুবায়েরের প্রকাশিত তথ্যের সত্যতা যাচাই এবং প্রাতিষ্ঠানিক তদন্তের দাবি তুলেছেন।

আরও পড়ুন  বৃক্ষরোপণে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার পেল রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ সুপার
শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন