কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা আমিনুল কবির রানার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন নির্বাচিত ইউপি সদস্য একযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে তাঁর অপসারণের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে উদ্যোক্তা আমিনুল কবির রানা (৩৪) ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের বিভিন্ন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আসছেন। জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, জাতীয়তা সনদ, ভোটার আবেদন, প্রত্যয়নপত্র, মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন, ভিজিডি ও টিসিবি কার্ডের মতো সেবাগুলোর ক্ষেত্রে তিনি নির্ধারিত ফি’র তিনগুণ পর্যন্ত টাকা নেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এমনকি সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের কাছ থেকেও মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, তাঁরা বারবার এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে রানাকে সতর্ক করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। বরং ২০২৫ সালের ভোটার হালনাগাদের সময় এক ইউপি সদস্য দ্রুত অনলাইন আবেদন সম্পন্নের পরামর্শ দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন।
পরিস্থিতি চরমে পৌঁছালে ৮ সেপ্টেম্বর ইউপি সদস্যরা তাঁর কার্যকলাপের প্রতিবাদ করেন। এতে রানা পুনরায় ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ ও হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।অবশেষে ৬ অক্টোবর ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন সদস্য যৌথভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন দাখিল করেন। তাঁরা অভিযুক্ত উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও দ্রুত অপসারণের দাবি জানান।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আমিনুল কবির রানা বলেন,“আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আওয়ামী দোসর কয়েকজন মেম্বার মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন,“অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। পাশাপাশি কিছু অডিও-ভিডিও প্রমাণও হাতে এসেছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হতে থাকবে। তাই প্রশাসনের আরও কঠোর নজরদারি জরুরি।
