চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে গুরুতর আহত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথার খুলি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে গত শনিবার (১ নভেম্বর) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার মাথার খুলির অংশটি প্রতিস্থাপন করা হয়। একই ঘটনায় আহত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মামুনের খুলির অংশটি প্রায় দুই মাস আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে খুলে রাখা হয়েছিল জীবন রক্ষার্থে। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে শনিবার প্রতিস্থাপন করা হয় তার খুলিটি। বর্তমানে মামুনের শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে।
পার্কভিউ হাসপাতালে অপারেশনটি সম্পন্ন করেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাঈল হোসেন। তিনি জানান, “অস্ত্রোপচারের পর কিছু জটিলতা থাকতে পারে বলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি প্রকাশ করিনি। তবে অপারেশনটি সফল হয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যেই তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, একই সংঘর্ষে গুরুতর আহত ইমতিয়াজ আহমেদ বর্তমানে ফিজিওথেরাপি নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থাও দ্রুত উন্নতির দিকে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী এবং ১০-১২ জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন। সংঘর্ষে মাথায় গুরুতর আঘাত পান মামুন মিয়া ও ইমতিয়াজ আহমেদ।
প্রথমে তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে পার্কভিউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং মামুনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। জীবনরক্ষার্থে সে সময় তার মাথার খুলির একটি অংশ খুলে রাখা হয়েছিল।
চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যরা জানান, দীর্ঘ চিকিৎসা ও সেবাযত্নের পর মামুনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখন তিনি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন।
