আরপিও সংশোধনের অধ্যাদেশ জারীঃ

ফেরারি আসামিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না

এনামুল হক রাশেদীঃ

অবশেষে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। এতে ফেরারি আসামিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, মিথ্যা তথ্য দিলে এমপি পদ বাতিলসহ একাধিক নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি যুক্ত করা হয়েছে ‘না’ ভোটের সুযোগও।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, অনুচ্ছেদ-১২ তে বলা হয়েছে—কোনো ব্যক্তি আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি ঘোষিত হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য হবেন এবং প্রার্থী হতে পারবেন না। একইসঙ্গে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা অনুরূপ পদে থাকলেও প্রার্থী হওয়া যাবে না।

লাভজনক পদে নিষেধাজ্ঞা:
কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী পদকে ‘লাভজনক পদ’ হিসেবে সংজ্ঞাভুক্ত করা হয়েছে। ফলে এমন পদে থেকে নির্বাচন করা যাবে না। প্রার্থীদের হলফনামায় দেশে-বিদেশে আয়ের উৎস এবং সর্বশেষ আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। মিথ্যা তথ্য প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এমপি পদ বাতিল করতে পারবে।

‘না’ ভোট ও অন্যান্য পরিবর্তন:
অনুচ্ছেদ-১৯-এর সংশোধনীতে ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কোনো আসনে একমাত্র প্রার্থী থাকলে ব্যালটে ‘না’ ভোট থাকবে। না ভোট বেশি পড়লে পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জোট ও প্রতীক:
অনুচ্ছেদ-২০ অনুযায়ী, জোট গঠন করলেও প্রতিটি দলকে নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন:
সংশোধনীতে ইভিএম ব্যবহারের বিধান বাতিল করা হয়েছে। তবে আইটি-সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হয়েছে—যাতে প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী ও কয়েদিরা ভোট দিতে পারবেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞা:
অনুচ্ছেদ-২ সংশোধন করে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রয়োজন হলে সেনা মোতায়েনের ক্ষমতা পাবে ইসি।

জামানত ও ব্যয় সীমা:
জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ভোটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গণমাধ্যম উপস্থিতি ও স্বচ্ছতা:
অনুচ্ছেদ-৩৬ অনুযায়ী, ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকতে পারবেন। দলের অনুদানের হিসাব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

আরও পড়ুন  দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা, বিজিবি'র জরুরী বার্তা

আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি:
নতুন বিধানে আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা, এবং দলের ক্ষেত্রেও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

এছাড়া নিবন্ধন স্থগিত হলে দলের প্রতীকও স্থগিত থাকবে। অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন